এ এক সাংস্কৃতিক বয়ান। সমাজ পরিবেশ পরিস্থিতি সহ গত শতকের সাতের দশকের উত্তাল আবহ, সময়ের জটিলতা, রাজনীতি ও ব্যক্তি মানুষের দ্বিরালাপ। কবিমনের অনুভূতিতে সব দেখা-বোঝা-জানা। আবেগ রোমান্টিসিজম বলতে বলতেই জীবনের ভিতরে, সময়ের ভিতরে উঁকি ঝুঁকি দেন। কেন এই আখ্যান লেখার প্রয়োজন হল এই কুজ্ঝটিকাপূর্ণ সময়ে? কবি তার দায়বদ্ধতা থেকে সরে এসেছেন। কেন কবিতা লিখি এই বয়ানে বিবিধ জবাবদিহি উঠে আসে। ভালোলাগা, আনন্দ দান, কাজ নেই ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু কবিতাই তো দেশকে, মানুষকে পথ দেখাবে। কবির সেই সমাজচেতনা, দায়বদ্ধতা অস্তগামী হয়েছে। জীবনের বেলাভূমিতে কবিতা কোন পথে যাত্রা করবে? বিষাদময় সময়ে, সন্ত্রাসের পটভূমিকায়, রাষ্ট্রীয় নির্যাতনে কবি ও কবিতা কতখানি গ্রহণযোগ্য তার হিসাব নিকেশের পক্ষ-বিপক্ষের আখ্যান ‘নতমুখ চরাচর’। ... ...
এই বইটাতে সুদীপ্ত দু’টি দুরূহ কাজ সম্পন্ন করেছে। প্রথমত সহজে বিজ্ঞান বলা, আর দ্বিতীয়ত বাংলায় বিজ্ঞান বলা। এই দু’টিই যে কতটা কঠিন কাজ – সেটা যারা কখনো চেষ্টা করেছেন, তাঁরাই জানেন। সেই কাজটা আরো কঠিন হয়ে যায়, যখন আপনি এমন কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলতে বসেন, যার অনেকটাই এখনো কুয়াশায় ঢাকা। সমকামিতার কারণ এখনো তর্কাতীতভাবে জানা যায়নি। এর পেছনের একটা কারণ বিষয়টির জটিলতা, অপর কারণটি রাজনৈতিক। সমকামিতা জেনেটিক না এপিজেনেটিক না হরমোনাল না সামাজিক এই নিয়ে বহু পরস্পরবিরোধী তত্ত্ব আছে। এই জট পাকানো বিষয়টিকে বইটিতে সুন্দরভাবে গুছিয়ে ধাপে ধাপে পরিবেশন করা হয়েছে, যাতে সহজে গ্রহণ করা যায়, কোথাও ধাক্কা খেতে না হয়। যেখানে যেখানে প্রয়োজন, সেখানে সুদীপ্ত খুব সুন্দরভাবে একদম গোড়ার কথাগুলোও পরিষ্কার করে দিয়েছেন। ... ...
ইতিহাস তো অনেক রকম হয়, এই গল্পগুলোও কিন্তু একটা সময়ের সাক্ষী হয়ে থেকে গেল। নিমো গ্রামের বিবর্তনের কথাও ধরা পড়ে কিছু কিছু গল্পে, যেমন 'যাত্রা' গল্পে। গ্রামও বারবার তার চরিত্র বদলায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকার সময় কী কী পরিবর্তন এসেছিল সেটার কথাও উঠে আসে বিভিন্ন গল্পে। তবে বেশিটাই প্রচ্ছন্ন ভাবে। আবার এটাও ঠিক যে অনেক কিছুই বদলায় না। যেমন বন্ধুত্ব, লোককে বাঁশ দেওয়া, দরকারে এক জোট হওয়া এবং ঘটিদের আলসেমি। গল্প গুলো পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল জীবনে খুব স্ট্রেস হলে কয়েকদিন নিমোতে গিয়ে এই মানুষগুলোর মাঝে থেকে আসব। জীবন দর্শনটাই অন্য লেভেলের এদের অনেকের। অবশ্য অনেকেই নিশ্চই এসব দর্শন-টর্শন মাড়ান না। ... ...
গোকারাকন্ডা নাগা সাইবাবা, একজন শিক্ষক, গবেষক, মানবাধিকার কর্মী, দলিত ও আদিবাসীদের অধিকার আন্দোলনে যুক্ত একজন সমাজকর্মী। জীবনসঙ্গিনী বসন্ত কুমারির জন্মদিনে একটি চিঠিতে তিনি তাঁর বিস্ময় ব্যক্ত করেন। বলেন, আমরা তো সামান্য কর্মী, সামান্য উপায়ে সামান্য মানুষদের জন্য কাজ করি! তাহলে এই পরাক্রমশালী রাষ্ট্র কেন আমাদের আশা, আমাদের ভালোবাসা, আমাদের স্বপ্নকে ভয় পায়? আমরা কি কাউকে কোনও ভাবে কষ্ট দিয়েছি? কারো ক্ষতি করেছি? কেন আমাদের জীবনের ওপর এই আক্রমণ? কেন আমাদের স্বপ্নগুলোকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়? কেন আমাদের আশা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়? ... ...
সোমনাথ রায়ের 'অরূপ বৃন্দাবন ও অন্যান্য পদ' পড়লাম। শুরুতেই 'প্রথম দর্শনে দেখি' পদে দর্শন-অদর্শনের আনন্দ - বিষাদের ঘনঘটা। শেষ পর্যন্ত সোমনাথ থামেন, 'প্রথম স্পর্শ তাই গরলবিলাসী' - স্পর্শন আর গরল বিলাসিতায় কোথায় সমাপতন খোঁজেন সোমনাথ সেটা স্পষ্ট হল না। সমগ্র পদে যতিচিহ্নের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও ভাবের প্রকাশে হেরফের হয় না। ... ...
অজিত রায় দেখছেন কীভাবে ভদ্দরলোকের ভাষা আসলে ক্ষমতার ভাষা, এবং তারাই স্ল্যাংকে ছোটলোকের ভাষা বলে মুটেমজুর কুলিকামিন ,চাষি জেলে ও বেশ্যাদের মুখের ভাষাকে অপাংক্তেয় করে দেয়। দাগিয়ে দেয় নিকৃষ্ট, অপকৃষ্ট, ইতরদের ভাষা বা ছোটলোকদের ভাষা বলে। আমরা জানি, পাওলো ফ্রেরি তাঁর ‘পেডাগজি অফ অপ্রেসড্’ এ দেখিয়েছেন কীভাবে অভিজাতকুলের ভাষা আসলে ক্ষমতাকে ধরে রাখার হাতিয়ার হয় এবং বঞ্চিতেরা ভাষা নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগে, ভুগতে বাধ্য করা হয়। ... ...
শব্দখেলায় সোমনাথের পটুত্ব আরও নানা কবিতায় ছাপ রেখে গেছে। ‘মাধব মথুরা মত যাও’ -তে শুধু অনুপ্রাসের চমৎকার ব্যবহারে চমৎকৃত হই না, অবাক দেখি ব্রজবুলির মধ্যে অবলীলায় জায়গা করে নিচ্ছে স্টেশন, গাড়ি, স্টিমার শব্দগুলি। বেখাপ্পা তো নয়ই, বরং অন্য শব্দ বসানো যাবে না এমন অমোঘ। শব্দ বার বার এই পদগুলিতে ব্রহ্ম হয়ে এসেছে, কারণ যে শব্দ, সেইই মাধব! ... ...
এবারে আসি বই প্রসঙ্গে। সবগুলো গল্পই পড়েছি। তিন চারটে গল্প দু-বার করে পড়তে হয়েছে অনুধাবন করার জন্য। তবুও সম্যকভাবে রসাস্বাদন যে করতে পেরেছি সেটি জোর দিয়ে বলা যায় না। তবে কাহিনীগুলি পড়ে বেশ ভাল লেগেছে। মনে হল এগুলি তিনি গভীরভাবেই গবেষণা ও ক্ষেত্র সমীক্ষা করেই রচনা করেছেন। দেশের ভিন্ন ভিন্ন মানুষের, নানা জনপদের, বিবিধ ইতিহাস-ঐতিহ্যের, রকমারি যাপিত জীবনের অসম্ভব নিখুঁত নির্মাণ করেছেন দক্ষ প্রকৌশলীর মত। ... ...
উপন্যাস-এর নামটা আমাকে বুঝতেই দেয়নি ভিতরের খনিজের উপস্থিতি। প্রচ্ছদে যুবতীর ছবি দেখে মনে হয় কোনো রগরগে রবিবাসরীয়ের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছি। বুঝিনি এই অতি সংক্ষিপ্ত উপন্যাসের প্রতিটি লাইন এক বিরল জীবনদর্শনের মুখোমুখি করে দেবে আমাকে। এক অন্য ধরণের সত্যানুসন্ধান, সাধারণ খুনের মামলার প্রেক্ষাপটে যা এক যুবক যুবতীর উৎকেন্দ্রিক আরণ্যক ভালোবাসা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে। তেলেগুতে এনক্রিপ্টেড, বাংলায় লেখা, সিডিতে সংরক্ষিত ডায়রি লেখনে বন্দী হয়ে থাকে সেই জীবনকাহিনী। আর কংকাল প্রেমিক-এর জীবন ও মৃত্যু রহস্য উন্মোচিত হয় নোংরা পরির হাতে। ... ...
ফরিশতা ও মেয়েরা! কোথা থেকে যে শুরু করি বুঝে উঠতে পারছিনা। বইটি ঘরে ফেরত আসার পর আবার একবার গোটা বইয়ের তেরোটি গল্প তাড়িয়ে তাড়িয়ে পড়লাম। দ্বিতীয় বারের পড়ায়ও ততটাই নতুন লাগলো যা কিনা প্রথমবার লেগেছিল। বরং বেশ কিছু বিষয় আরো আরো স্পষ্ট হয়ে ধরা দিলো। চারপাশের নতুন নতুন অধরা বিষয়গুলো তাঁর গল্পে স্থান পেয়েছে। ... ...
"সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রিয় লেখক কবিদের বইয়ের নাম অক্লেশে ব্যবহার করতে পারেন। জীবনানন্দের 'কারুবাসনা' শঙ্খ ঘোষের 'দিনগুলি রাতগুলি'র মতো তাঁর দুটি উপন্যাসের নাম। এক সহবাসী সঞ্জয়ের মৃত্যু দিনে কথক বুনো এক কল্পিত তরুণী কস্তুরীকে দেখতে পান। পাঠক বোঝেন এ বিভ্রম। কিন্তু বুনোর বন্ধু সিদ্ধার্থ বোঝে না।" সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিনগুলি রাতগুলি, পড়লেন ইমানুল হক। ... ...
লেখক ইন্দ্রাণী দ্রষ্টা হয়ে দেখেন পরিস্থিতির চাপে অসহায় মানুষজন। এবং নির্মমভাবে ছেঁটে ফেলেন ‘সুখী গৃহকোণ, শোভে গ্রামোফোন’ সমাপ্তির সম্ভাবনাগুলোকে। কোন ইচ্ছাপূরণের চেষ্টা চোখে পড়ে না। হিংসা ঝলসে ওঠে নীল আকাশে অকস্মাৎ। না একটু ভুল হল। ইন্দ্রাণীর বিশ্বে হঠাৎ করে কিছুই ঘটেনা। বজ্রগর্ভ মেঘের প্রস্তুতি চলে সন্তর্পণে। সমতলের নীচে টেক্টোনিক প্লেটের নড়াচড়া সহজে চোখে পড়বে না। কিন্তু ঈশান কোণে জমতে থাকা মেঘ মনোযোগী পাঠকের রাডারে ধরা পড়বে। ... ...
দুই তিন বছর আগের কথা। মেয়ের পাঠ্য বইগুলি নাড়াচাড়া করতে করতে প্রথম হাতে এল ‘সহজ পড়া’ প্রথম পর্ব, লেখক সুদেষ্ণা মৈত্র। বইটা মেয়েকে পড়াতে পড়াতে কেমন ভালো লাগতে শুরু করল। তারপরেই শিশু সাহিত্য সংসদের ক্যাটালগ খুঁজে সংগ্রহ করলাম ‘সহজ পড়া’ দ্বিতীয় পর্ব। এইবার আরো মুগ্ধ হলাম। সেই ১৯৯৭ সালের এক ডিসেম্বর মাসে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল সুদেষ্ণা মৈত্রের ‘সহজ পড়া ’ বইটির দুটি খণ্ড। প্রকাশক শিশু সাহিত্য সংসদ। আপাতভাবে শিশুপাঠ্য এই বইদুটি বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পাঠ্যতালিকার অন্তর্গত। কিন্তু এই দুটি বই পাঠ্যতালিকার গুরুগম্ভীর গণ্ডি পেরিয়ে শিশুদের এক আশ্চর্য কল্পনার ভুবনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। ... ...
তাহলে অভিজিৎ সেনের এই দুটি উপন্যাসই মানুষকে তার নানা সম্পর্ক, নানা পরিপ্রেক্ষিতের মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়। রোদে সেদ্ধ চাল শুকোনোর মতো কলম দিয়ে উল্টেপাল্টে আউলা ঝাউলা করে ছাড়ে তার প্রতিটি প্রতিক্রিয়াকে। আদর্শ বা পূর্ণ মানবের দেহরেখা আঁকার কোনো চেষ্টাই করে না, অপূর্ণতা আর অসহায়তার রঙে চুবিয়ে তোলে আমাদের সমস্ত অস্তিত্ব। শেষ করে পাঠক ফুঁপিয়ে উঠতে পারে, কিন্তু সেজন্য তার লজ্জা হবে না। এই অপূর্ণতার অশ্রুই আমাদের ভবিতব্য! ... ...
বিষয় নির্বাচন, ঘটনাবহুল দ্বন্দ্ব-সংঘাতপূর্ণ সেই বিষয়কে পর্বে পর্বে বিন্যস্ত করা, চরিত্রনির্মাণ, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সংঘাতের চিত্রণ, বিশেষত নারীচরিত্রের রহস্য, সৌন্দর্য, সংকীর্ণতা এবং মহত্বের অসাধারণ উন্মোচন, নদী-জল ভিত্তিক জীবনের ছবিকে তার নিজস্বতায় প্রতিষ্ঠিত করা এবং সর্বোপরি জীবনকে জয় করা এবং তাকে প্রতিষ্ঠার জন্য জোটবদ্ধ লড়াইয়ের অনিবার্যতা - এ সবই অসামান্য স্বাভাবিকতায় প্রতিষ্ঠিত এই উপন্যাসে। লেখকের মুন্সিয়ানার মূলে আছে এই নিপীড়িত, নিঃস্ব মানুষগুলোকে খুব কাছ থেকে দেখে পরম মমতা এবং ভালবাসায় তাদের আত্মীয় করে নেওয়া। নইলে এই উপন্যাস রচনা করা সম্ভব হত না। বিশেষত ওপার বাংলার মানুষের কথ্য ভাষার এমন নিপুণ ব্যবহার গভীর বন্ধুত্ব ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়ার উপলব্ধ সত্য যে কত খাঁটি তা অসিত কর্মকারের এই গভীর এবং নিবিড় কর্মে ছত্রে ছত্রে প্রতিফলিত। একেবারেই ত্রুটি নেই,এ কথা আমি বলব না। রাজনীতি, দল এই প্রসঙ্গগুলো এসেছে তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে নয়। সে যাই হোক, অসিত কর্মকার তাঁর যে সৃষ্টি আমাদের উপহার দিলেন তার জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ থাকব। ... ...
চরের মানুষের জীবন সংগ্রামের এই গল্প জাদু-বাস্তবের ঘরানা অনুসারী না বাস্তবতা-নির্ভর তা তর্কযোগ্য। কিন্তু এই উপাখ্যানে অবিসংবাদিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নারীসত্তার প্রাধান্য, জল জঙ্গম ও মানবমনের রক্ষাকর্ত্রী নারীশক্তির উন্মেষ ও প্রতিষ্ঠা। অমর মিত্রের ধনপতির চর, পড়লেন প্রতিভা সরকার। ... ...
কেবারে আধুনিক উপন্যাসের লক্ষণে গল্পের সঙ্গে গাঁথা আছে রান্নাবাড়ার খুঁটিনাটি, রাজনৈতিক খবরাখবর। পুরুষের চোখে দেখা ইতিহাসের ভাঁজ খুলে তার ভেতর থেকে মেয়েদের ইতিহাসের টুকরোগুলো সযত্নে আলাদা করে দেখা। পড়লেন জয়া মিত্র ... ...
সুদীপ বসুর কবিতা। অন্যায়ের প্রতিস্পর্ধী চিৎকার। স্বতন্ত্র কাব্যভাষায় এ কবিতা মানবীয় অভিজ্ঞতাকে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাকে জাদুর মোড়ক দিয়ে নানা অর্থব্যঞ্জনার সৃষ্টি করে। লিখছেন কথাকলি জানা ... ...
লুইস সেপুলভেদা। ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্র নির্দেশক, চিত্রনাট্যকার, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মী। স্বদেশ চিলে। ১৯৭৩ সালে ক্ষমতাসীন আউগুস্তো পিনোশে সরকার প্রথমে কারারুদ্ধ ও পরে নির্বাসিত করে। কিছুকাল একুয়াদরবাসী। সান্দিনিস্তা বিপ্লবে সক্রিয় অংশগ্রহণ। পরে জার্মানির হামবুর্গ শহরে পাকাপাকি বসবাস। কোভিড-আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ২০২০-র ১৬ এপ্রিল। তাঁর বিখ্যাত নভেলা ‘দ্য ওল্ড ম্যান হু রিড্স লাভ স্টোরিজ’ পড়লেন ঋতা রায় ... ...
যদিও রবীন্দ্রনাথকে ‘ভক্তি’র কবি বলা যায় না, তবু ‘ভক্তি’র সঙ্গে তাঁর যোগ কি অস্বীকার করা যায়? ছেলেবেলায় তিনি তুকারাম তরজমা করেছিলেন। মধ্যবয়সে করলেন কবির, ইভলিন আন্ডারহিল-এর সঙ্গে ইংরেজিতে। বিদ্যাপতির বেশ কিছু মৈথিলি পদও একসময় করেছিলেন। দুটি শিখ ভজন আছে তাঁর গানে অনূদিত। ‘গুরুগ্রন্থসাহেব’-এর একটি পদও বলা হয় তাঁর করা। অনুবাদ ছাড়াও তাঁর গভীর বোধ আছে ‘ভক্তি’ নিয়ে, বিশেষ করে কবির ও নানক নিয়ে। অতএব, তাঁর উনিশ শতক সঞ্জাত ও ক্রমান্বিত অভিজ্ঞতায় জারিত যে-আধুনিকতা তার সঙ্গে বোধকরি কোনো বিরোধ নেই ঐতিহ্যের। ... ...